বর্তমান মার্কেট হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং আর সেন্সর বেজড প্রযুক্তির মার্কেট। এই তিনটি সেক্টরে যে যত বেশি বিনিয়োগ করবে, যে যত বেশি সফল হবে, ততই তার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
আজকের আর্টিকেলটির টপিক "মেশিন লার্নিং" নিয়ে।
জেনারেলি আমরা প্রোগ্রামিং বা কোডিং এর মাধ্যমে একটা কম্পিউটারকে ইন্সট্রাকশন দেই কিছু করার। সেই অনুযায়ী কম্পিউটার কাজ করে। এর বাইরে সে নিজে থেকে কিছুই করতে পারে না, নিজে থেকে শিখতে পারে না।
কিন্তু "মেশিন লার্নিং " এর মাধ্যমে কম্পিউটারকে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়, যাতে কম্পিউটার ঐ বিষয়ক কোনো প্রোগ্রাম বা ইন্সট্রাকশন ছাড়াই কিছু শিখতে পারে। ও সেই অনুযায়ী আউটপুট প্রদর্শন করে।
মেশিন লার্নিং মুলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর একটি এপ্লিকেশন যেটি নিজে নিজে কিছু শেখার ক্ষমতা রাখে। এর মানে এই না যে মানুষের মতো প্রোগ্রামটি চারপাশ থেকে জ্ঞান আহরণ করে। আমরা প্রথমে একটা প্রোগ্রামকে প্রসেস বলে দেই, বাকি কাজ ঐ প্রোগ্রাম করে ফেলে। মানে শিখে ফেলে ও সে অনুযায়ী কাজ করে। এটাই মেশিন লার্নিং বা এমএল।
এর জন্য বিপুল পরিমাণ তথ্য-উপাত্ত প্রোগ্রামকে দিতে হয়। প্রোগ্রাম সেই ডেটা এনালাইসিস করবে। কিন্তু তার জন্য কিছু ইন্সট্রাকশন দিতে হয়। কীভাবে সেই ডেটা এনালাইসিস করতে হবে, সেই ডেটার একটি মডেল বা প্যাটার্ন বের করতে হবে, কীভাবে কোন এলগরিদম ব্যবহার করতে হয় এসব ইন্সট্রাকশন দেওয়া লাগে।
এসব করে দিলেই, বাকি সব কাজ ঐ প্রোগ্রামের বা ঐ মেশিন এর।
একটা জিনিস ভেবে দেখুন, একটা প্রোগ্রামকে বিপুল পরিমাণ তথ্য-উপাত্ত দেওয়া মানে তাকে অনেক অভিজ্ঞতা দেওয়া। সেই অভিজ্ঞতা, বিশ্লেষণ এর ফলাফল এর উপর ভিত্তি করে প্রোগ্রামটি আমাদের তথ্য দেয় বা কোনো সিদ্ধান্ত নেয়।
যেমন আবহাওয়া বার্তার প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামে পুর্বের সব আবহাওয়ার রেকর্ড ইনপুট দেওয়া হয়। ডেটা এনালাইসিস করার এলগরিদম দেওয়ার মাধ্যমে প্রোগ্রামকে ইন্সট্রাকশন দেওয়া হয়। এখন এই প্রোগ্রাম পুর্বের সব রেকর্ড এনালাইসিস করে বলে কালকের আবহাওয়া কেমন হবে।
এটা আপনি দেখতে পাবেন গুগল ওয়েদার বা অন্যান্য ওয়েদার এপ্লিকেশন এ৷ আজকের আবহাওয়ার পাশাপাশি আগামীকালের আবহাওয়ার আগাম বার্তা তারা প্রকাশ করে। এটা মুল ভিত্তি হলো মেশিন লার্নিং।
যদি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এ দাবা খেলে থাকেন, তাহলে দেখবেন কম্পিউটারকে প্রথম প্রথম কয়েকবার হারাতে পেরেছেন। কিন্তু এর পর তাকে আর হারানো যাচ্ছে না৷ কম্পিউটার দাবা খেলা শিখল কীভাবে?
আসলে কম্পিউটারকে দাবা খেলা শেখানো হয় নি। দাবার ঐ প্রোগ্রামে দাবা খেলার চাল সম্পর্কিত সব তথ্য, দাবার ম্যাচ এর রেকর্ড ও তথ্য সব ইনপুট দেওয়া আছে। দাবার ঐ প্রোগ্রাম এসব ডেটা এনালাইসিস করে সিদ্ধান্ত নেয় কোন চাল দিলে আপনার গুটি খাওয়া যাবে বা থামানো যাবে।
আপনি যতই ঐ দাবা খেলবেন, ততই আপনার হেরে যাওয়ার চান্স বেড়ে যাবে। কারণ আপনার সাথে প্রতিটি ম্যাচের তথ্য সে সেভ করে রাখে। তাকে এভাবে ইন্সট্রাকশন দেওয়া হয়েছে।
আজকাল ছোটখাটো এপ্লিকেশনেও এমএল ব্যবহার করা হয়। বুঝতে পারছেন ২০২১ সালের পর টেক কম্পিটিশন এ এগিয়ে থাকতে হলে এআই অথবা এমএল এর উপর দক্ষ হতেই হবে?
মেশিন লার্নিং এর কিছু এপ্লিকেশন |
এমএল যত উন্নত হচ্ছে, তার শেখার ক্ষমতা ততই বাড়ছে। হয়তো ভবিষ্যতে স্টক মার্কেট এ বিনিয়োগকারিদের খবর বা তথ্য পড়তে হবে না। মেশিন তাদের কাজ করে দেবে।
এখন প্রশ্ন, এমন একটা পর্যায় কী আসবে যেখানে কোনো প্রোগ্রাম মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে আগামীকালকের স্টক মার্কেটের অবস্থা ও শেয়ারের দাম জানাতে সক্ষম হবে?
যদি এর উত্তর আপনার কাছে থাকে, তাহলে অভিনন্দন ❤
0 Comments